শিরোনাম
আকস্মিক বন্যায় মৎস্যচাষি ও মৎস্যজীবীদের করণীয়
বিস্তারিত
অস্বাভাবিক পানি প্রবাহ, হঠাৎ করে বা আকস্মিকভাবে কোন এলাকায় আঘাত হানাকে আকস্মিক বন্যা বলে। আকস্মিক বন্যায় প্রাকৃতিক ও ভৌত-অবকাঠামোসহ মৎস্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে। এ ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে নিম্নবর্ণিত পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করা যেতে পারেঃ
আকস্মিক বন্যার পূর্বে করণীয়:
- পুকুর বা জলাশয়ের চারিদিক বাঁশের বানা বা ঘন জাল দিয়ে ঘিরে দিন।
- ২৩ এপ্রিল-অক্টোবর (চৈত্র আশ্বিন) মাসে আকস্মিক বন্যার আগাম সতর্কতা পেতে সজাগ থাকুন।
- টিভি/রেডিওতে নিয়মিত আবহাওয়া বার্তা শুনে বা ১০৯০ নম্বরে জি ফোন করে বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ বার্তা জানুন ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন।
- পুকুরের/ জলাশয়ের অপেক্ষাকৃত বড় মাছগুলি বিক্রি করার ব্যবস্থা নিন।
- বন্যা কবলিত হতে পারে এমন পুকুরের প্রজননক্ষম মাছ ও ছোট মাছগুলিকে সতর্কতার সাথে পুকুরে নেটের তৈরি হাপা বা খাঁচা স্থাপন করে তাতে সংরক্ষণ করুন বা বন্যা-ঝুঁকিমুক্ত জলাশয়ে স্থানান্তর করুন।
- পাড়ে বেড়া দেয়ার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে জাল, মাছের খাবার, চুন, অক্সিজেন বৃদ্ধিকারক ও অন্যান্য অনুমোদিত মেডিসিন, প্রয়োজনীয় উপকরণ মজুত করে রাখুন।
- মৎস্যজীবীগণ মাছ ধরার উপকরণ (জাল, নৌকা ইত্যাদি) নিরাপদ স্থানে রাখুন।
- নিকটস্থ মৎস্য অফিস ও অন্যান্য সেবা দানকারী সংস্থার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন।
আকস্মিক বন্যাকালীন করণীয়:
- পুকুর বা জলাশয়ের সুবিধাজনক স্থানে একাধিক জায়গায় ডাল-পালার ঝোপঝাড় দিয়ে মাছের আশ্রয়স্থল বা কাঠা বানিয়ে নিন যাতে মাছ সেখানে আশ্রয় নিতে পারে।
- মাছকে নিয়মিত দুইবেলা (সকালে সূর্য্য উঠার দুই ঘন্টা পর এবং বিকাল ৩-৪ টার দিকে) খাদ্য দিতে হবে।
- দ্রুত আকৃষ্ট হয় এমন খাদ্য/ খাদ্য একই এলাকায় বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া জলাশয়ের মালিকগণ সমাজভিত্তিক বা যৌথভাবে জাল বা বানা দিয়ে ঘেরাও করে মাছ চাষ ও রক্ষা উপকরণ (খৈল, চিটাগুড়, কেঁচো ইত্যাদি) জলাশয়ের নির্দিষ্ট দুই বা ততোধিক স্থানে দিতে হবে।
- বন্যা কবলিত পুকুরের মাছ খাবি খাচ্ছে এমন লক্ষণ দেখা দিলে এয়ারেটর স্থাপন/ পাতিল দিয়ে পানিকে আন্দোলিত করে বা অক্সিজেনবর্ধক করার উদ্যোগ নিতে পারেন। উপকরণ নির্ধারিত মাত্রায় প্রয়োগ করে অক্সিজেন বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
- বন্যা চলাকালীন সময় জলাশয়ে প্রবল দ্রোতের মধ্যে মৎস্যজীবীগণ মাছ ধরা থেকে বিরত থাকুন এবং নিজেদের জান-মাল রক্ষায় সচেষ্ট থাকুন।
- মৎস্যচাষ ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত পরামর্শ সেবার জন্য অফিস চলাকালীন সময়ে ১৬১২৬ হট লাইন নম্বরে ফোন করুন।
আকস্মিক বন্যা পরবর্তীকালে করণীয়:
- পুকুর বা জলাশয়ের পাড় ভেঙ্গে গেলে দ্রুত মেরামত করুন বা ভাংগা অংশে জাল/বানা দিয়ে ঘিরে ফেলুন।
- বন্যার পানির সাথে বাহির থেকে ভেসে আসা অনাকাংখিত মাছ পুকুরে প্রবেশ করলে তা ধরে ফেলুন।
- বন্যার পানি নেমে গেলে স্থানীয় মৎস্য অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী পুকুরে পরিমাণমত চুন এবং লবণ প্রয়োগ করুন।
- বন্যার পানি নেমে যাওয়ার নতুন করে মাছ চাষ শুরু করার পূর্বে স্থানীয় মৎস্য অফিসের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
- পানিতে প্রাকৃতিক খাবার তৈরি হলে অর্থাৎ পানি সবুজাভ হলে ভাল জাতের বড় আকারের চাপের পোনা নির্দিষ্ট মজুদ ঘনত্ব অনুসারে মজুত করুন।
- জাল টেনে মাছের পরিমাণ নির্ধারণ করে নিয়মিত ও পরিমিত সুষম মৎস্য খাদ্য প্রয়োগ করুন।
- পুকুরের পানির গুণাগুণ ও মাছের স্বাস্থ্য নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করুন। মাছ বড় হলে আংশিক আহরণ করে মজুদ ঘনত্ব ও পুকুরের ধারণ ক্ষমতা ঠিক রাখুন।
- বন্যাকবলিত এলাকায় পানি ৩-৪ মাস স্থায়ী হওয়ার সম্ভবনা থাকলে পেন বা খাঁচায় মাছ চাষের উদ্যোগ গ্রহণ করুন।
- পানি নেমে গেলে প্রয়োজনে জাল নৌকা মেরামত করুন মৎস্যজীবীগণ বন্যার বন্যাকবলিত পুকুরে মাছের রোগ-বালাই বা অন্য কোন সমস্যা দেখা দিলে স্থানীয় মৎস্য অফিস ও অন্যান্য সেব্য দানকারী সংস্থার সাথে যোগাযোগ রাখুন।
প্রচারেঃ সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়
সৈয়দপুর, নীলফামারী।
জরুরী প্রয়োজনে মোবাইল নম্বর: ০১৭৬৯৪৫৯৭৭৭
০১৭৩১৩২৯০০৬